হারুন অর রশীদ কে ছিলেন? তিনি ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন? তৃতীয় এবং শেষ পর্বে আপনাকে স্বাগতম।
হারুন অর রশীদ কে ছিলেন? তিনি ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন? পর্ব ০২
ইসলাম ইনসাফপূর্ণ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিধান নিশ্চিত করেছে। ন্যায়বিচার কায়েম করার বিধান শুধু ইসলামই সমাজে উপহার দিয়েছে। গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী, মার্কসবাদী, নাস্তিক্যবাদী, লেলিনবাদী অথবা স্যাকুলারিজম এসব ব্যবস্থা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এসব ধাঁচে পরিচালিত রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা সবসময় অন্যায়কে পুঁজি করে অথবা দুর্নীতিকে অবলম্বন করে মতার মসনদ পাকাপোক্ত করার কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে টিকে থাকার স্বপ্নে বিভোর হয়েছে। অন্যায়, অবিচার ও জুলুম ইসলামি অনুশাসনের যে পরিপন্থী, এ কথা তারা মনেই করে না।
কুরআন এবং সুন্নাহর শাসনব্যবস্থা অর্থাৎ, সৎ ও নৈতিক গুণাবলিসম্প
হারুনুর রশিদ ছিলেন পঞ্চম আব্বাসীয় খলিফা। হারুনুর রশিদ ৭৮৬ সাল থেকে ৮০৯ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। এসময় ইসলামি স্বর্ণযুগ তার সর্বোচ্চ সীমায় ছিল।
হারুন অর রশীদ কে ছিলেন? তিনি ইতিহাসে এতো বিখ্যাত কেন? পর্ব ০১
তার শাসনকাল বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির কারণে খ্যাত। এসময় ইসলামি শিল্প ও সঙ্গীতের যথেষ্ট প্রসার হয়। তিনি বাগদাদের বিখ্যাত গ্রন্থাগার বাইতুল হিকমাহ প্রতিষ্ঠা করেন। বাইতুল হিকমাহ ছিল আব্বাসীয় আমলে ইরাকের বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত একটি গ্রন্থাগার, অনুবাদকেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটিকে ইসলামি স্বর্ণযুগের একটি প্রধান বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাইতুল হিকমাহ এ সময় তা সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌছায়।
জ্ঞানের আদানপ্রদানের জন্য হারুনুর রশিদ এবং তারছেলে খালিফা আল মামুন অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিকে বাইতুল হিকমাহতে নিয়ে আসেন। ৯ম থেকে ১৩ শতক পর্যন্ত পারসিয়ান ও খ্রিষ্টানসহ অসংখ্য পন্ডিত ব্যক্তি এই গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। আরবিতে গ্রন্থ অনুবাদ ও সংরক্ষণের পাশাপাশি পন্ডিতরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌলিক অবদান রাখেন।
হারুনুর রশিদ বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধশালী হওয়ায় তার জীবন ও দরবার বিভিন্ন গল্পের উপাদানে পরিণত হয়েছে। এসবের মধ্যে কিছু বাস্তব তবে অধিকাংশই কাল্পনিক হিসেবে গণ্য করা হয়।
বাস্তব ঘটনাবলীর মধ্যে অন্যতম হল শার্লেমাইনের কাছে ঘড়ি পাঠানোর ঘটনা। ৭৯৯ সালে হারুনুর রশিদের কাছে বন্ধুত্বের আহ্বান জানিয়ে পাঠানো ফ্রাঙ্কিশ দলকে বিদায়ী উপহার হিসেবে এটি দেয়া হয়েছিল। শার্লেমাইন ও তার লোকজন এই ঘড়ির শব্দ ও কার্যকলাপের কারণে একে জাদুবস্তু ভেবেছিলেন।
আরব্য রজনীতে হারুনুর রশিদ সম্পর্কে কাল্পনিক ঘটনাসমূহের উল্লেখ রয়েছে। এসব গল্প তিনি ও তার জৌলুসপূর্ণ দরবারের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে।
এরাবিয়্ন নাইটস, যার অসংখ্য কাল্পনিক চরিত্র হল হারুনুর রশিদ।
১৯৪২ সালে নির্মিত এরাবিয়্ন নাইটস সিনেমা, যার কেন্দ্রিয় চরিত্র হারুনুর রশিদ।
শিয়া সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তি সপ্তম শিয়া ইমাম মুসা ইবনে জাফরের হত্যার সাথে হারুনুর রশিদের সম্পর্কের কারণে তাকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখেন।
ধন্যবাদ ৷