বিটকয়েন ইনকাম করুন, একাউন্ট খোলা থেকে কাজ করার নিয়ম

সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভাল আছেন। আজকের টপিকে আমি বিটকয়েন কি এবং বিটকয়েনের সাথে সম্পর্কিত অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব এবং কিভাবে আপনি আপনার বিটকয়েন অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং বিটকয়েন ইনকাম করবেন সে বিষয়েও আলোচনা করব। তো চলুন মূল টপিকে যাওয়া যাক।

বিটকয়েন ইনকাম করুন, একাউন্ট খোলা থেকে কাজ করার নিয়ম


{tocify} $title={Table of Contents}


বিটকয়েন কি?

বিটকয়েন হচ্ছে বিশ্বের সর্বপ্রথম ওপেনসোর্স ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা। যখন আমরা কোনো লেনদেন করি তখন সাধারণত টাকা ব্যবহার করি যেটি আমরা চাইলেই হাতে ধরতে পারি বা অনলাইনেও কারো কাছে পাঠাতে পারি। কিন্তু, এই টাকা সবসময়ই ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অন্যদিকে আমরা চাইলেই বিটকয়েন কে হাতে ধরতে পারিনা। বিটকয়েন দ্বারা লেনদেন করার সময় শুধু সেই পরিমাণ বিটকয়েন এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ট্রান্সফার হয়। এর মধ্যে থাকে না কোন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক এর সংযোগ। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সির দ্বারা যেসব লেনদেন গুলি করা হয় এই লেনদেনগুলি সত্যাখ্যান করা হয় ক্রিপ্টোগ্রাফি মাধ্যমে এবং প্রকাশ্যে লিপিবদ্ধ করা হয়। এই লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়াকে ব্লকচেইন বলা হয়। কিন্তু আজকে আমরা ব্লকচেইনের আলোচনায় যাব না যেহেতু আজকে আমরা শুধু বিটকয়েন নিয়ে আলোচনা করছি।


বিটকয়েনের দাম কত?

বিটকয়েন এর বর্তমান বাজার মূল্যের ধারণা পাওয়ার জন্য আমরা সাধারণত এক বিটকয়েন কে ইউএসডি (USD) তে রূপান্তরিত করে থাকি। বিটকয়েনের দাম প্রায় প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে পরিবর্তন হয়। এই আর্টিকেলের এই প্যারাটি লিখার সময় এক বিটকয়েনের দাম ছিল ৩৮৮২১.৩০ ইউএসডি। এই প্যারাটি শেষ করে অন্য পাড়ায় যেতে যেতেই বিটকয়েনের দাম অনেকটা বেড়ে যেতে পারে অথবা কমে যেতে পারে। বিটকয়েন এর বর্তমান দাম জানতে গুগোলে গিয়ে "1 btc to usd" লিখে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন।


বিটকয়েন একাউন্ট/ওয়ালেটঃ

বিটকয়েন একাউন্ট মূলত এমন একটি অ্যাকাউন্ট যেখানে আপনি বিটকয়েন জমা রাখতে পারবেন এবং অন্য কাউকে বিটকয়েন পাঠাতে পারবেন। বিটকয়েনের এই একাউন্টকে বিটকয়েন ওয়ালেট বলা হয়। বিটকয়েন জমা রাখা ও পাঠানো ছাড়াও বিটকয়েন ওয়ালেটে আরো বিভিন্ন ফিচারস থাকে। বিটকয়েন একাউন্ট বা বিটকয়েন ওয়ালেট অন্যান্য অনলাইন একাউন্ট এর মতো নয়। ধরুন, আপনি ফেসবুক ব্যবহার করবেন। তার জন্য অবশ্যই আপনাকে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। কিন্তু, বিটকয়েনের বেলায় আপনি অনেক বিটকয়েন ওয়ালেট পেয়ে যাবেন আপনার খুশি মত যেকোনো ওয়ালেটে অ্যাকাউন্ট খুলেই বিটকয়েন জমা রাখতে পারবেন এবং অন্য কাউকে পাঠাতে পারবেন। এখন আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন যে আমার জন্য কোন বিটকয়েন ওয়ালেট ব্যবহার করা ভালো হবে? বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিটকয়েন ওয়ালেট হিসেবে কয়েনবেস ব্যবহার করাই শ্রেয়। কারণ, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই কয়েনবেস ব্যবহার করে। আর আপনি যদি বিটকয়েনের ইনকাম করা টাকা বিকাশে অথবা বাংলাদেশী কোন একাউন্টে আনতে চান তাহলেও আপনাকে কয়েনবেস ব্যবহার করতে হবে। কারণ, বিটকয়েন থেকে বিকাশে অথবা বাংলাদেশী কোন একাউন্টে টাকা আনার জন্য বিভিন্ন থার্ড-পার্টি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হয় সেসব থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট কয়েনবেস সাপোর্ট করে। আর তাছাড়া কয়েনবেস টু কয়েনবেস বিটকয়েন সহ সকল ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রানস্ফার একেবারেই ফ্রী। কয়েনবেস বিটকয়েন ছাড়াও আরো প্রায় ১০০ এর উপরে ক্রিপ্টোকারেন্সি সাপোর্ট করে।


কিভাবে বিটকয়েন একাউন্ট বা ওয়ালেট ক্রিয়েট করবেন?

উপরে আমি ইতিমধ্যে বিটকয়েন ওয়ালেট নিয়ে আলোচনা করেছি এবং কোন বিটকয়েন ওয়ালেট টি ব্যবহার করলে আপনার জন্য ভালো হবে তাও আলোচনা করেছি। এবার আসি কিভাবে বিটকয়েন ওয়ালেট এ একাউন্ট ক্রিয়েট করবেন সে বিষয়ে। কয়েনবেসের মাধ্যমে একেবারে বিনামূল্যে একটি বিটকয়েন ওয়ালেট ক্রিয়েট করতে পারবেন। আর কয়েনবেসে বিটকয়েন ওয়ালেট ক্রিয়েট করে আপনি যদি ১০০ ডলারের সমপরিমাণ বিটকয়েন সেন্ড রিসিভ করেন তাহলেই পেয়ে যাবেন ১০ ডলার বোনাস। বিটকয়েন ওয়ালেট করা খুবই সহজ। কিন্তু, তারপরেও আমি বিটকয়েন একাউন্ট খোলার ধাপগুলো বলে দিচ্ছি।

  1. প্রথমেই এখানে ক্লিক করে কয়েনবেসের ওয়েবসাইটে চলে যান।
  2. এবার একটি ফরম দেখতে পাবেন যেটি বিভিন্ন একাউন্ট খুলতে দেখতে পাওয়া যায় সেখানে আপনি আপনার সকল তথ্য দিয়ে ক্রিয়েট একাউন্ট এ ক্লিক করবেন।
  3. একাউন্ট ক্রিয়েট হয়ে গেলে আপনার দেওয়া এই মেইল এড্রেসে একটি ভেরিফিকেশন ইমেইল চলে যাবে। ইমেইল টি ওপেন করে ভেরিফাই মাই এড্রেস বাটনে ক্লিক করুন।
  4. এবার আরেকটি উইন্ডো ওপেন হবে সেখানে আপনার মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে সেন্ড কোড বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরিফিকেশন কোড এসএমএসে আসবে।
  5. কোডিটি বসিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনার কয়েনবেস একাউন্ট ব্যবহারের জন্য তৈরি।

কিভাবে বিটকয়েন ইনকাম করবেন?

বিটকয়েনের মাধ্যমে লেজিট উপায়ে ইনকাম করার মাধ্যম হলো মাইনিং। কিন্তু মাইনিং করার জন্য প্রয়োজন অনেক পাওয়ারফুল কম্পিউটার। মাইনিং ছাড়াও বিটকয়েন ইনকাম করার আরও অনেক উপায় আছে। অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা তাদের ওয়েবসাইটে কাজ করিয়ে বিটকয়েন দেয়। সেসব কাজের মধ্যে রয়েছে এড দেখা, ভিডিও দেখা, রেফার করা ইত্যাদি। বর্তমানে বিটকয়েন ইনকাম করার এমন দুইটি সাইট হলো adBTC এবং CoinPayU। এছাড়াও আপনি আরো অনেক উপায়ে বিটকয়েন ইনকাম করতে পারেন। যেমনঃ যখন বিটকয়েনের দাম কম থাকবে তখন যদি আপনি কিছু বিটকয়েন কিনে রাখেন, পরবর্তীতে যদি কখনো বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধি পায় তখন সেগুলো বিক্রি করে আপনি প্রফিট জেনারেট করতে পারবেন। এসব ক্ষেত্রে লস হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

আশা করি আজকে টপিকটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগেই থাকে তাহলে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। আর, আপনি যদি কোন বিষয় নিয়ে জানতে আগ্রহী হোন তাহলে সে বিষয়টি আমাদেরকে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। আপনাদের পছন্দের বিষয় নিয়ে আমরা লিখতে চেষ্টা করব।